বাংলাদেশ

রহস্যজনক আচরণ স্যাটেলাইটের, ভারত মহাসাগর থেকে আমেরিকার দিকে

যুক্তরাজ্য একটি স্যাটেলাইট পাঠিয়েছিল ১৯৬৯ সালে মহাকাশে। নাম ছিল স্কাইনেট-ওয়ানএ। এটি ছিল এক সময়কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপগ্রহ, যা ব্রিটিশ সামরিক যোগাযোগের জন্য পূর্ব আফ্রিকার ওপরে অবস্থান করছিল।

একসময়, পৃথিবী থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে মহাকাশে নিজস্ব কক্ষপথে নির্দিষ্ট কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল সে স্যাটেলাইট। তবে, কিছুদিন আগে বিজ্ঞানীরা এমন একটি অস্বাভাবিক বিষয় আবিষ্কার করলেন, যা তাদের অবাক করে দিয়েছিল।

স্যাটেলাইটটি হঠাৎ করে তার নির্ধারিত কক্ষপথ ছেড়ে দেয় এবং কয়েক হাজার মাইল দূরে চলে যায়। আগে ভারত মহাসাগরের ওপরে থেকে এখন অবস্থান করছে আমেরিকার দিকে।

কিন্তু এই আচরণ কেন ঘটল? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিজ্ঞানীরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। কক্ষপথের নিয়ম অনুযায়ী, অর্ধ-টন ওজনের একটি স্যাটেলাইট কখনোই নিজের অবস্থান থেকে এতদূর সরে যেতে পারে না।

এমন ঘটনা একেবারেই অসম্ভব! তাই তারা একটি তত্ত্ব দাঁড় করান, হয়তো স্যাটেলাইটটি ইচ্ছাকৃতভাবে সরানো হয়েছে। কিন্তু কে বা কীভাবে এমন একটি কিছু করতে পারে? প্রশ্নের কোনো স্পষ্ট উত্তর তাদের কাছে নেই।

স্কাইনেট-ওয়ানএ এখন এমন একটি স্থানে চলে গেছে, যেখানে পৃথিবী থেকে কিছু দূরে একটি ‘গ্র্যাভিটি ওয়েল’ তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে এটি এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরছে, একে অন্য স্যাটেলাইটের কক্ষপথের কাছাকাছি চলে আসছে।

এই অবস্থা আরও বেশি রহস্যের জন্ম দেয়, কারণ এটি এখন কর্মক্ষম নয় এবং কোনো একসময় অন্য স্যাটেলাইটের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

ড. স্টুয়ার্ট ইভস, একজন মহাকাশ পরামর্শক, দাবি করেছেন, ‘এটি এখন মহাকাশের এক বিপদজনক জায়গায় পৌঁছে গেছে। আমরা নিশ্চিত না কীভাবে এটি হলো, কিন্তু এই স্যাটেলাইটের এমন আচরণ পৃথিবী ও মহাকাশ গবেষণায় নতুন এক রহস্যের জন্ম দিয়েছে।’

কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো এটি ভালো ছিল না কি খারাপ? এখন পর্যন্ত কেউ বলতে পারছে না, কারণ এই অদ্ভুত ঘটনার পরিণতি কী হবে, তা বলা কঠিন।

কিছু বিজ্ঞানী ধারণা করছেন, এটি কোনো ভুল বা প্রযুক্তিগত ত্রুটি হতে পারে, আবার কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করছেন, এটি একটি ইচ্ছাকৃত ঘটনা, যাতে আমাদের সামনে বড় কোনো উদ্দেশ্য লুকানো থাকতে পারে।

স্যাটেলাইটটির রহস্যময় আচরণ এখন পুরো বিশ্বের বিজ্ঞানী, গবেষক এবং মহাকাশ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একটি অজানা প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সোর্স: দৈনিক দিগন্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button