সূরা লাহাব নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্ট শেয়ার
শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও এখনও অনুতপ্ত নয় আওয়ামী লীগ। বরং সুযোগ পেলেই প্রতিশোধ নিতে চায় দলটি। এ বিষয়ে শনিবার (১৬ নভেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে পবিত্র কোরআনের সূরা লাহাবকে নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট সাঈদ আব্দুল্লাহ। তার সেই পোস্ট শেয়ার করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
পোস্টে তিনি লিখেন- পবিত্র কোরআনের সূরা লাহাব আমি যতবার পড়েছি, ততবারই যেই ব্যাপারটা আমার মাথায় আসে- আবু লাহাবের প্রতি স্বয়ং আল্লাহ কেন এমন কঠোর অবস্থানে চলে গেলেন যে তার শাস্তির ব্যাপারে কোরআনে একেবারে ওইভাবে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়ে বলে দিলেন? ‘ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দুই হাত এবং সে নিজেও!’
স্ট্যাটাসে লেখা হয়, শুধু আবু লাহাবই না, তার ইন্ধনদাতা স্ত্রীর প্রতিও কঠোর শাস্তির বর্ণনা কেন এভাবে ঘোষণা করে দিলেন? আল্লাহ একদিকে যেমন মহাপরিক্রমশালী কঠোর বিচারক, অন্যদিকে পরম ক্ষমাশীলও। বহুক্ষেত্রে অসম্ভব রকমের ক্ষমাশীলতা উনি দেখানোর ব্যাপারে বলেছেন। ইনফ্যাক্ট, উনি ক্ষমাশীল না হলে একটা সিঙ্গেল প্রাণীও কোনদিন কোন রহমতের আশ্রয় পেতো না বা পাবেও না। কিন্তু সেই স্রষ্টাই কেন তাহলে আবু লাহাবের প্রতি সরাসরি এভাবে এত কঠোর ঘোষণা দিলেন?
স্ট্যাটাসকারী লেখেন, এই ব্যাপারে আমার জানার ভুল থাকতে পারে বা বুঝবার সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, তবে আমার একেবারেই পার্সোনাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং হলো- সব অপরাধ বা পাপের ক্ষমা হয় না। বিশেষ করে যেখানে প্রচণ্ড সীমালঙ্ঘন করার পরও ওই অপরাধীর মনে কোন অনুশোচনাবোধ বা অনুতপ্তবোধ জন্ম না নেয়।
আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতার : প্রধান উপদেষ্টা
প্রশ্ন করে সাঈদ আব্দুল্লাহ লেখেন, সত্যি করে বলেন তো, আশেপাশে এমন কোন আওয়ামী লিগার দেখেছেন যারা অনুতপ্ত? জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজার মানুষ মেরে ফেলা, পঁচিশ হাজার মানুষকে চিরতরে মারাত্মক আহত করে ফেলা নিয়ে ন্যূনতম কোন অনুশোচনা?
বিগত ১৫ বছরে ওরা যে হাজার হাজার মানুষকে মেরে ফেলেছে, গুম, নিপীড়ন, লুটপাট চালিয়েছে- এগুলো নিয়ে ওদের ভেতর ন্যূনতম অনুশোচনা দেখেছেন? বরং ওরা প্রতিশোধ নিতে চায় সুযোগ পেলেই। সুযোগ পেলেই তাদের অরিজিনাল রূপটা বের করে ফেলতে চায়। এরা হলো এই লেভেলের অমানুষ!
এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্টের দাবি, ক্ষমা করা যায় তাদেরকে, যাদের ভেতর অনুশোচনাবোধ জাগ্রত হয়, যারা অনুতপ্ত হয়। কিন্তু যারা নিজেদের চরম অপরাধের পরও ন্যূনতম অনুতপ্ত না, এমন অমানুষদের ক্ষমা করার মানে হলো অন্যদের প্রতি অবিচার করা এবং সামনে ওদের জন্য অপরাধ করার দুয়ার উন্মুক্ত রাখা। এজন্যই আমি এদের বিচার চাই, কঠোর বিচার চাই। স্বৈরাচারী হাসিনা ও তার সঙ্গী-সাথী এবং তাদের সকল ইন্ধনদাতাদের দেখলে তাই আমার মনে হয় সূরা লাহাবের কথা।
অতিরিক্ত সুশীলগিরি দেখিয়ে সুযোগ পেলেই কেউ কেউ দেখি নরম সুরে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু সবাই যে ক্ষমার যোগ্য না, এই শিক্ষাটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ, ইনফ্যাক্ট মহাগুরুত্বপূর্ণ!
সোর্স: দৈনিক দিগন্ত