উস্কানি দিয়ে নেত্রী ঘুমাই হিন্দুস্তান, আর বোকা কর্মী মার খায় গুলিস্তান’
নূর হোসেন দিবসে রাজধানীর গুলিস্তানে কর্মসূচি দিয়ে মাঠেই নামতে পারল না পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ। ছাত্র-জনতা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের দিনভর ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের মুখে কোথাও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি ফ্যাসিবাদের দোসররা।
কর্মসূচি প্রতিহত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরাও গতকাল রাত থেকেই দিনভর মাঠে ছিল। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে দুই-একজন মাঠে নামার চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক তা প্রতিহত করে ছাত্র-জনতা। এ ধরনের কিছু ছবি-ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
রোববার বার বিকেল ৩টায় রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে এই বিক্ষোভ মিছিল করার কথা ছিল দলটির। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দলটির এমন কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। এমনকি দলটির নেতা-কর্মীদেরও দেখা মিলেনি।বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ছাত্র-জনতা আর বিএনপির নেতা-কর্মীদের দখলে ছিল রাজধানীর জিপিও ও গুলিস্তান এলাকা।
শনিবার রাত থেকেই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের ৫ আগস্ট পরবর্তী ডাকা প্রথম এই কর্মসূচি প্রতিহত করার বিষয়টি ফেসবুকের ‘হট টপিক’সে পরিণত হয়। সবার নজর থাকে গুলিস্তানের দিকে। এ নিয়ে দিনভর একের পর এক পোস্ট দেন নেটিজেনরা। পতনের পর পতিত স্বৈরাচারের আজকের আরো অধঃপতন দেখে ফেসবুকে অনেকেই মন্তব্য করেন, ‘উস্কানি দিয়ে নেত্রী ঘুমাই হিন্দুস্তান, আর বোকা কর্মী মার খায় গুলিস্তান’।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় যুবলীগ কর্মী নূর হোসেনকে হত্যার দিনটিতে রোববার ঢাকার জিপিও এলাকার ‘নূর হোসেন চত্বরে’ শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু বাকিটা যেন ইতিহাস হয়ে থাকলো।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে ফেসবুকে লিয়াকত আলী লিখেছেন, আফসোস লীগের ঠাই এখন ম্যানহোলের ভেতরে, মাঝে মাঝে ঢাকনা উদাম করে দুর্গন্ধ ছড়াতে চায় কিন্তু পারে না,জনগণ সাথে সাথে ম্যানহোলের ঢাকনা বন্ধ করে দেয়। আহ্ আফসোস লীগ।
সাংবাদিক কেফায়েত শাকিল লিখেছেন, দেশে পোলাপাইনগুলো একটু শান্তিতে লুকিয়ে আছে সেটা বিদেশে পালিয়ে যাওয়া নেতাদের সহ্য হচ্ছে না। হুদাই বিপদে ফেলার ধান্দা।
আবিদুর রহমান হাসান লিখেছেন, আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন দল। গণহত্যার দায় নিয়ে নেতারা সব পলাতক। আত্মগোপনে থেকে কর্মসূচি দিতে পারবে। কিন্তু, ঘর থেকে বেরুবার সাহস আওয়ামী লীগের নেই।
মাহবুব সাদিক লিখেছেন, বিএনপি – জামাত – বাম দল – নুরু – গনসংহতি – বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এরা সবাই নানা ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে গেছে এবং সামনে আরো যাবে। কিন্তু মজার বিষয় হল এদের সবাইকে এক করে ফেলার জন্য আওয়ামী লীগের একটা ডাকই যথেষ্ট!! নানা মুনি নানা মত, ফ্যাসিস্ট রুখতে ঐক্যমত!!!
ইব্রাহিম খলিল লিখেছেন, যাইহোক দীর্ঘদিন থেকে জাতীয় অনৈক্য, হাসিনা আবার সবাইকে এক করে দিল। মেসেজ ক্লিয়ার যতই মতপার্থক্য থাকুক না কেন হাসিনা প্রশ্নে গোটা জাতি এক।
মামুন শাহানগরী লিখেছেন, যারা দল ক্ষমতায় থেকেও পাঁচ জনের মিছিলে পঞ্চাশ জন পুলিশ পাহারা দিতে হতো,তারা যে এখন রাজপথে মিছিল করার সাহস পাবে তা বিশ্বাস হয়না।
ইফতেখারুল আলম সাইফুল লিখেছেন, আওয়ামী লীগের নেতারা সব পালিয়ে গেছে, আর সাধারণ কর্মীদের বিপদে ফেলতে এই কর্মসূচি দিয়েছে,,,,, সরকার কঠোর হলে সাধারণ কর্মীরা চরম বিপদে পড়বে,,,, প্রায় ২০০০ তাজা প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পরেও এদের কোন অনুশোচনা নাই,,,,,,,,, সরকারকে কঠোর হতে হবে,,, প্রতিটি গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে,,,,।
ফেসবুকে অপর একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, যা বুঝলাম, একক ভাবে কোন দলের কর্মসূচি দেওয়া দরকার নাই। তারা দিলেই হয়। কর্মসূচিতে তারা না থাকলেও বাকী সবাই সেখানে উপস্থিত।
মজা করে মাজহার মাহবুব লিখেছেন, আওয়ামী লীগ পিডানোর জন্য এতোটাই আগ্রহ যে, রিকশাওয়ালা মামা যাত্রীসহ রিকশা দাঁড় করিয়ে রেখে এসে উত্তম কাজে অংশ নিয়েছে।
সোর্স: দৈনিক দিগন্ত