ভুলে হারপিক খেয়ে ফেললে করণীয়
হারপিক, যা সাধারণত টয়লেট, বাথরুম এবং অন্যান্য পানি ব্যবহারের জায়গায় কঠিন জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে শক্তিশালী জীবাণু-বিধ্বংসী উপাদান থাকায় টয়লেটের ময়লা, জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং দুর্গন্ধ দূর করতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। এর মূল উপাদান হলো হাইড্রো ক্লোরিক এসিড।
ভুলবশত বা ইচ্ছা করে হারপিক খেয়ে ফেললে কণ্ঠনালি ও খাদ্যনালির ভেতর মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস ও খাদ্যগ্রহণ অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই এমনটা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে দিশাহারা না হয়ে প্রাথমিকভাবে কী করা দরকার চলুন জেনে নেওয়া যাক।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের থোরাসিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সেরাজুস সালেকিন পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভুলে হারপিক খেয়ে ফেললে সবার প্রথমে যা করা দরকার তা হলো দ্রুত মুখ কুলি করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। যে পরিমাণ হারপিকই খাদ্যনালির ভেতরে ঢুকে যাক না কেন বাকি টুকু বের করে আনার চেষ্টা করতে হবে। একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে তা হলো হারপিক খেলে যেহেতেু খাদ্যগ্রহণ অসম্ভব হয়ে পড়ে তাই মুখে খাবার বন্ধ রেখে সাত থেকে দশ দিন পর্যন্ত স্যালাইন সলিউশন চালাতে হবে।
অন্যদিকে, যেহেতু হারপিক কণ্ঠনালি ও খাদ্যনালির ভেতর মারাত্মক ক্ষতি করে তাই এন্ডোস্কোপি করে দেখতে হবে খাদ্যনালি ও পাকস্থলিতে কতটুকু ক্ষত সৃষ্টি করেছে। একটু স্বাভাবিক হলে রোগীকে তরল ও নরম খাবার অল্প অল্প করে বারে বারে খেতে দিতে হবে।
এছাড়া যদি রোগী কোনোভাবেই কিছুই খেতে না পারে এবং এন্ডোস্কোপি বা বেরিয়াম এক্সরেতে খাদ্যনালি একদম সরু দেখায়, তবে একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর সেটি এন্ডোস্কোপি বেলুন দ্বারা ফুলানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। আর পাকস্থলি নিচের দিকে সরু হলে সেটা একটা অপারেশন করে ঠিক করতে হবে।
এতেও যদি খাবার না খাওয়া যায় তবে পেটে একটি নল দিয়ে দেওয়া হয় যেটাতে তরল খাবার দেওয়া যাবে। মনে রাখা জরুরি যে এই সব কিছুই করতে হবে হারপিক পান করার সাত মাসের মধ্যে। এর ভেতর কোনো বড় অপারেশন করা সম্ভব নয়।
অপরদিকে হারপিক খাওয়ার পর খাদ্যনালি পুড়ে গেলে সেটা অপারেশন করে কেটে ফেলে পাকস্থলি জোড়া লাগানো যায়। তবে পাকস্থলিও যদি পুড়ে যায়, সেক্ষেত্রে জটিলতা বেড়ে যেতে পারে।
সোর্স: দৈনিক দিগন্ত